ডেস্ক নিউজ: কোটা ব্যবস্থা চাকরীতে মেধাবীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় বাঁধা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কোটা ব্যবস্থা তুলে দেওয়া উচিত। কোনো দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কোটা ব্যবস্থা চলতে পারে না।
তিনি বলেন, নিয়োগ বিধি অনুযায়ী সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটা বরাদ্দ রয়েছে ৫৬ শতাংশ। মেধার তুলনায় বেশির ভাগ পদ কোটায় বরাদ্দ থাকলেও পদ শূন্য থেকে যাচ্ছে। যেখানে মেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছে না। এতে দেশের প্রকৃত মেধাবীরা চাকরির বাইরে থেকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময়ের তুলনায় বর্তমান বাংলাদেশের অবস্থানের অনেক পরিবর্তনও ঘটেছে, বদলেছে চাকরির বাজার, মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থা। ফলে কোটা সংস্কার এখনই প্রয়োজন।
মঙ্গলবার নয়াপল্টনস্থ যাদু মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ’র সম্পাদকমন্ডলীর সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোটার কারণে আজ প্রকৃত মেধাবীরা চাকরি পাচ্ছেন না, মেধাবীরা তাদের যোগ্যতা দিয়ে সঠিক কর্মস্থল পাচ্ছে না। কোটা সংস্কারের দাবীতে দেশের লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর চলমান আন্দোলনকে দেশবাসী সমর্থন করেছে। সরকারের উচিত তাদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করে কোটা প্রথা সংস্কার করা।
মোস্তফা বলেন, কোটা ব্যবস্থা একদম থাকবে না, এমনটা নয়। তবে পিছিয়ে পড়াদের জন্য সর্বসাকুল্যে ১০ শতাংশ কোটা রাখা যেতে পারে। এগুলো যেমন- শারীরিক প্রতিবন্ধী, উপজাতি, নারী এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য রাখতে হবে। কোটার জন্য যোগ্য ও মেধাবীরা কোনোভাবেই যেন বঞ্চিত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মেধাবী ও যোগ্যতা সম্মত লোক বঞ্চিত হলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময় চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার কারণে আমাদের দেশে প্রশাসনে মেধাবীদের চেয়ে কোটাধারী কম মেধাবীরা বেশি জায়গা করে নিচ্ছেন। আর শুধু সাধারণ ক্যাডার কেন, কলেজের শিক্ষক, বিচার বিভাগ সবখানেই তো কোটার কারণে অতি মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। কাজেই কোটা পদ্ধতির অবশ্যই সংস্কার হওয়া এখন সময়ের দাবী।
সভা কোট সংস্কার আন্দোলনকারীদেরকে দেশের প্রবীণ রাজনীতিক ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী “রাজাকারের বাচ্চা” হিসাবে আখ্যায়িত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে বলা হয়, মতিয়া চৌধুরীর এই বক্তব্যে প্রমানিত হয় তিনি এখন আর পরিপূর্ণ সুস্থ মানুষ নন। তিনি মানষিক বিকারগ্রস্থ। সুতরাং তাকে এরপরও মন্ত্রীসভায় রাখা অর্থ হচ্ছে সরকার নিজেই মানষিক বিকারগ্রস্থ।
সভা কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর পুলিশী ও সরকারী দলের ছাত্রসংগঠনের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে, হামলার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, গ্রেফতারকৃত সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নি:শর্ত মুক্তি এবং আহতদের সুচিকিৎসা ব্যাস্থার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানান। একই সাথে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোন দেশবিরোধী ও সুবিধাবাদী চক্র ঢাবি ভিসির বাসভবনে হামলা করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছে কিনা দলীয় দৃষ্টিকোন ও অপরাজনীতির উর্দ্ধেউঠে রহস্য উদঘাটকে সরকারের নিকট জোর দাবী জানান।
ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী ফারুক হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব স্বপন কুমার সাহা, মো. নুরুল আমান চৌধুরী, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আহসান হাবিব খাজা, মো. শহীদুননবী ডাবলু, মো. কামাল ভুইয়া, নির্বাহী সদস্য এডভোকেট আবদুস সাত্তার, এখলাছ হক প্রমুখ।